মিষ্টি কুমড়া বীজের উপকারিতা

আপনারা প্রশ্ন করেছেন মিষ্টি কুমড়া বীজের উপকারিতা সম্পর্কে। আজকের আর্টিকেল থেকে আপনারা জানতে পারবেন মিষ্টি কুমড়া বীজের উপকারিতা সম্পর্কে। 

পোস্ট সূচিপত্রঃ মিষ্টি কুমড়া বীজের উপকারিতা

ভূমিকা

আমাদের কাছে সবজি হিসেবে মিষ্টি কুমড়া খুবই প্রিয়, এর কারণ এটি খুবই সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর। আর সেই সাথে মিষ্টি কুমড়ার বীজ অনেক উপকারী। মিষ্টি কুমড়ার বীজ ও অনেক পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ একটি খাবার। যদিও অনেকেই এ বিষয়ে না জানার কারণে মিষ্টি কুমড়ার বীজ ফেলে দেয়। তবে আজ আপনাদের মাঝে আলোচনা করব, মিষ্টি কুমড়া বীজের উপকারিতা, পুষ্টিগুণে ভরা মিষ্টি কুমড়ার বীজ ও মিষ্টি কুমড়ার বিচি খাবেন যে ৬ কারণে সেই সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে।

মিষ্টি কুমড়া বীজের উপকারিতা

মিষ্টি কুমড়ার পাশাপাশি মিষ্টি কুমড়ার বীজেও রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। মিষ্টি কুমড়ার বীজের ৩০ শতাংশই ফ্যাটি অ্যাসিড, আর এই ফ্যাটি অ্যাসিড রক্তে অস্বাস্থ্যকর কোলেস্টেরল এর মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এটি এতটাই পুষ্টিকর যে ১০০ গ্রাম কুমড়ার বীজ থেকে ৫৬০ ক্যালরি পাওয়া যায়। যার কারণে মাত্র ১০০ গ্রাম কুমড়ার বীজ খেয়ে ক্ষুধা মেটানো সম্ভব খুব ভালোভাবেই। আসুন নিচে ধাপে ধাপে জেনে নেই, মিষ্টি কুমড়া বীজের উপকারিতা গুলো কি কি।
ভালো ঘুমঃ মিষ্টি কুমড়ার বীজ ভালো ঘুম হতে সাহায্য করে। কারণ মিষ্টি কুমড়ার বীজে আছে সেরোটোনিন নামক পদার্থ। আর এই সেরোটোনিনকে প্রকৃতির ঘুমের ওষুধ বলা হয়। আর তাই ভালো ঘুম পেতে ঘুমানোর পূর্বে এক মুঠো মিষ্টি কুমড়ার বীজ খেতে পারেন।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাঃ মিষ্টি কুমড়ার বীজ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। কারণ এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং ফাইটোকেমিক্যাল যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে সেই সাথে ভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি কমিয়ে আনে।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেঃ খাদ্য আশ সমৃদ্ধ মিষ্টি কুমড়ার বীজ যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আর তাই কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে নিয়মিতভাবে মিষ্টি কুমড়ার বীজ খেতে পারেন।

শরীরের ওজন কমাতেঃ শরীরের ওজন কমাতে বেশ ভূমিকা রাখে কুমড়ার বীজ। কারণ এই ছোট্ট খাবারে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি যা ক্ষুধা মেটাবার কাজ করে ভালোভাবেই। এটি আশ জাতীয় খাবার বলে হজম হতে বেশ সময় লাগে, আর তাই ঘন ঘন ক্ষুধা পায় না। এর ফলে মানুষ খাদ্য গ্রহণ কম করে থাকে, আর শরীরের ওজন কমে।

ক্যান্সার ঝুঁকি কমাতেঃ ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে মিষ্টি কুমড়ার বীজ খুবই উপকারী। মিষ্টি কুমড়ার বীজ পাকস্থলী, ফুসফুস, কোলন, ব্রেস্ট ও প্রোস্টেট, এ সমস্ত ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।

মেয়েদের চুল লম্বা করতেঃ অনেক সময় মেয়েরা চুল লম্বা করতে চাই, কিন্তু চুল লম্বা হয় না। চুল লম্বা করতে সাহায্য করে মিষ্টি কুমড়ার বীজ। কারণ এতে রয়েছে কিউকুরবিটিন অ্যামিনো অ্যাসিড যা চুল বৃদ্ধি করতে সহায়ক। মিষ্টি কুমড়ার বীজে থাকা ভিটামিন সি চুলের বৃদ্ধি করে।

পুষ্টিগুণে ভরা মিষ্টি কুমড়ার বীজ

ভিটামিন-এ সমৃদ্ধ মিষ্টি কুমড়া যেটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য যেমন উপকারী, ঠিক তেমনি চোখের জন্যও বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। মিষ্টি কুমড়া খাওয়ার ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। তবে শুধুমাত্র মিষ্টি কুমড়াতেই সব ধরনের পুষ্টিগুণ রয়েছে এমনটি নয়, মিষ্টি কুমড়ার বীজেও রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। এতে রয়েছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। কুমড়ার বীজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, জিংক, ম্যাগনেসিয়াম ও ফ্যাটি এসিড যা হৃৎপিণ্ড ভালো রাখতে খুবই উপকারী।
  • পুষ্টিগুনে ভরা মিষ্টি কুমড়ার বীজ বাতের ব্যথা দূর করতে বেশ কার্যকর।
  • আমরা আগেই জেনেছি মিষ্টি কুমড়ার বীজে রয়েছে জিংক যা পুরুষের উর্বরতা বাড়ায় এবং সেই সাথে প্রোস্টেট এর যে কোন সমস্যা প্রতিরোধ করে।
  • পুষ্টিগুণে ভরা মিষ্টি কুমড়ার বীজ হার্ট ভালো রাখতে সাহায্য করে।
  • শরীরের বিভিন্ন রকম জ্বালাপোড়ার অনুভূতি কমানোর ক্ষমতা রাখে এই মিষ্টি কুমড়ার বীজ।

মিষ্টি কুমড়ার বিচি খাবেন যে ৬ কারণে

মিষ্টি কুমড়া সবজি হিসেবে আমরা অনেকেই খুবই পছন্দ করি। এর কারণ এটি যেমন সুস্বাদু তেমনি পুষ্টিকর। তবে মিষ্টি কুমড়ার বিচিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ, যেটি আমাদের বিভিন্ন রকম সমস্যা দূর করতে ভীষণ ভূমিকা রাখে। আজ আপনাদের মাঝে আলোচনা করব, মিষ্টি কুমড়ার বিচি খাবেন যে ৬ কারণে সে সম্পর্কে।

১। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কুমড়ার বিচি খুবই উপকারী। কারণ এতে আছে ভিটামিন-ই। মিষ্টি কুমড়ার বীজে আছে অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদান যেটি শরীরের অ্যালার্জি জনিত সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।

২। মিষ্টি কুমড়ার বীজ নিয়মিত ভাবে খেলে শরীরের সব ধরনের বাতের ব্যথা বা অন্যান্য ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

৩। চুলের যত্নে মিষ্টি কুমড়ার বীজের ভূমিকা অতুলনীয়। নিয়মিতভাবে মিষ্টি কুমড়ার বীজ খাওয়ার ফলে চুলের সমস্যা দূর হবে, সেই সাথে ত্বকে বলিরেখা সহজে পড়বে না।

৪। ওজন কমাতে সাহায্য করে মিষ্টি কুমড়ার বীজ, কারণ এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি। তাই একমুঠো মিষ্টি কুমড়ার বীজ খেয়ে নিলে অনেকক্ষণ পর্যন্ত পেটে কোনরকম ক্ষুধা অনুভব হয় না।

৫। ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতেও মিষ্টি কুমড়ার বীজ খুবই উপকারী। কারণ এতে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম। ম্যাগনেসিয়াম শরীরের ক্লান্তি দূর করতে বেশ কার্যকর।

৬। প্রোস্টেট ভালো রাখতে বিশেষ উপকারী জিংক। আর কুমড়ার বিচিতে রয়েছে জিংক। তাই নিয়মিতভাবে কুমড়ার বিচি খেলে প্রোস্টেট ভালো থাকে, সেই সাথে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

মিষ্টি কুমড়া বীজের উপকারিতাঃ পরিশেষে

মিষ্টি কুমড়া সবজি হিসেবে ব্যবহার হয়ে থাকলেও, মিষ্টি কুমড়ার বীজ অনেকেই খেতে চান না। তবে মিষ্টি কুমড়ার পাশাপাশি, মিষ্টি কুমড়ার বীজেও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ। আর তাই এখন থেকে নিয়মিত ভাবে মিষ্টি কুমড়ার পাশাপাশি, মিষ্টি কুমড়ার বীজ খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। 
আজকের আর্টিকেল থেকে আপনারা জেনেছেন, মিষ্টি কুমড়া বীজের উপকারিতা, পুষ্টিগুণে ভরা মিষ্টি কুমড়ার বীজ ও মিষ্টি কুমড়ার বিচি খাবেন যে ৬ কারণে সে সম্পর্কে  বিস্তারিতভাবে। এই বিষয়ে আরো নতুন কোন তথ্য জানতে মন্তব্য করতে পারেন, ধন্যবাদ। ২৫২৪২

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url